সজল খান-
তরুণ প্রজন্মের কাছে জনপ্রিয় পরিচালকদের একজন মাবরুর রশীদ বান্নাহ। জনপ্রিয়তার পিছনে রয়েছে তার অক্লান্ত পরিশ্রম ও ধৈর্য । প্রথম থেকেই তার প্রত্যেকটি কাজে দেখিয়েছেন ভিন্নতার কারিশমা। মুগ্ধ করেছেন দর্শকদের। বছরের একেবারে শেষ প্রান্তে এসে নির্মাতা বান্নাহ তার ফেইসবুকে ২০১৮ সালের উল্লেখযোগ্য কাজ ও আগামী বছরের প্রত্তাশার কথা শেয়ার করলেন। সাথে যুক্ত করলেন ২০১৯ এ তার নতুন কিছু চিন্ত-ভাবনার কথা। বান্নাহ তার নতুন বছরের ইচ্ছা পূরণে সকলের দোয়া চেয়েছেন।
নির্মাতা মাবরুর রশীদ বান্নাহ’র ফেইসবুক পোষ্টটি –
“ক্লোজআপ কাছে আসার গল্প – আমি তোমার গল্প হবো” এবং “বেকার” দিয়ে আমার ২০১৮ শুরু । তারপর “তনিমা” সাথে “লোকটি সৎ ছিলো” । গিয়ার চেইঞ্জ করলাম “হোম টিউটর” দিয়ে । “বেড সিন”, “এবার তোরা মানুষ হ”, “লালাই” ই ছিলো অন্যরকম গল্প বলার চেষ্টা । আইফ্লিক্স এসে বুস্ট করলো দ্বিগুন গতিতে । সৎ সাহস করে বলে ফেললাম “ব্রা-দার” এর মত গল্প, বছর শেষ হচ্ছে “চোর” দিয়ে ।
”ছেলেটা বেয়াদব”, “জীবন”, “চশমায় লেগে থাকা ভালোবাসা”, “জীবন এখানে এমন”, “সেলাই দিদিমনি”, “কাঁদবো না”, “ছেলেটার মেয়েটা”, “বোন”, “সুখ”, “বাইকার”, “কতদিন পর হলো দেখা”, “মানুষ হবো”, “আমার পক্ষে তোমাকে রাখা সম্ভব না”, “সুখী পরিবার”, “ছাত্র”, “একটু হাঁসো”, “নিয়তি”, “গল্পটা”, “অস্থির ছেলেটা”, “ছাড়বোনা তোমাকে”, “আউটসোর্সিং ভালোবাসা”, “ছেলেরাও কাঁদে”, “ফুল হাত হাফ শার্ট”, “মানুষ” বা “ও যেনো আমার হয়” এর মতো ফিকশনগুলো থেকে আপনাদের কতটা ভালোবাসা পেয়েছি সেটা কোন আবেগে প্রকাশ করা সম্ভব আমি সত্যিই জানি না ।
বিশ্বকাপ ফুটবলের সময় “ব্রাজিল ভার্সেস আর্জেন্টিনা” বা “আর্জেন্টিনা ভার্সেস ব্রাজিল” সাথে “ভাই কিছু বলতে চায়” এও আপনাদের রেস্পন্স মুগ্ধতা ছড়িয়েছে ।
আমার এখনো মনে আছে দেশের একটি শীর্ষ স্থানীয় পত্রিকার ঈদের ড্রামা লিস্টের ২০ নামের মধ্যে আমার ড্রামা ছিলো ৯টি । আমি জানি এটা ইন্টেনশনাল ছিলো না । যদি তারা জানতেন ৯টি কাজ এক ডিরেক্টর এর তাহলে ইন্টেনশনালি ৭-৮টা কেটে ফেলতেন বলেই আমার মনে হয় । কিন্তু একেই বলে হয়ত “রাখে আল্লাহ, মারে কে !”
আমি অবশ্যই জেনে বুঝেই এ বছর অনেক কাজ করেছি । দেখাতে চেয়েছি টিম থাকলে অনেক কাজ যেমন করা সম্ভব, অনেক ভালো কাজ ও কোয়ালিটি ঠিক রেখে করা সম্ভব । ক্রেডিট গোওজ টু মাই ব্রিলিয়েট টিম । ওরা দেখিয়ে দিয়েছে আমি বলবো । ওদের নিয়ে যে দৌড় দিয়েছি, ওরাও আমার সাথে সে তালে দৌড়াতে পেরেছে । ভেরি ওয়েল ডান গাইজ ।
উপরে যে আমার এ বছরের সব কাজের নাম লিখেছি তা কিন্তু নয় । লিখেছি উল্লেখযোগ্য গুলোর । এত এনার্জি, বা সাহস পেয়েছি আল্লাহ’র ইচ্ছায়, পরিবার, সব সেক্টর এর বড় ভাইদের এবং বন্ধুদের অনুপ্রেরণায় ।
মোদ্দা কথা, খুব দুর্দান্ত একটা বছর কাটালাম একজন মেকার হিসেবে । এ বছর থামি নি, থামতেও চাই নি । এ বছর আল্লাহ আমার উপর বিশেষভাবে সদয় ছিলেন । রহমত নাজিল করেছেন । ১০৩ ডিগ্ৰী জ্বর ও আমাকে দমাতে পারে নি । শুটিং থামেনি । দুটো নাপা মেরে কাজ চালিয়ে যাবার রেকর্ড ও আছে । ২০১৭তেও যে দর্শক আমার কাজ অপছন্দ করতো তাকেও বাধ্য করেছি আমার কাজ নিয়ে ভালো মন্তব্য করতে, সেটা নিশ্চয়ই নিজের কাজ দিয়েই । প্রচুর মানুষের ভালোবাসা পেয়েছি । আমার মুখের কথার পাশাপাশি ইউটিউব এ ঢুকে কাজগুলোর নিচে লাখ লাখ মানুষের মন্তব্য পড়ুন প্রমান পেয়ে যাবেন । ডিরেক্টর বান্নাহকে যখন মালয়শিয়া, থাইল্যান্ড বা কলকাতার রাস্তায় থামিয়ে বলে আপনি ডিরেক্টর বান্নাহ না? তখন গর্ব হয়, ইমোশনাল হয় এই মানুষটি । দেশে থাকা মানুষগুলোর কথা নাই বা বললাম এইবার ।
আমি সারাবছর ধরে চেষ্টা করেছি নিজেকে ভাঙতে, আবার গড়তে, আবার ভাঙতে … আবারো গড়তে । সেজন্যেই শুধু এক জনরাতে কাজ করিনি । হিট খেয়েছি রোমান্টিকে, শুধু রোমান্টিক নিয়ে পড়ে থাকিনি । হিট খেয়েও পরের কাজেই করেছি এক্সপেরিমেন্ট । কোনকিছুর রাজা বা উজির হতে চাইনি । চেয়েছি নিজের সাম্রাজ্যের সম্রাট হতে । এই জন্য মনে শান্তিও বেশি । কারো প্রতি কোন রাগ, ক্ষোভ বা কমপ্লেইন নেই । আছে সবার প্রতি অজস্র ভালোবাসা । সামাজিক এবং মানুষ হিসেবে দায়িত্ববোধ থেকে কাজগুলোর মাধ্যমে দিয়েছি অগণিত পজেটিভ ম্যাসেজ টু দি সোসাইটি । এই ধারা ইন শা আল্লাহ সামনের বছরেও চলবে ।
২০১৯ এ নিজেকে আরো নেক্সট লেভেলের পরীক্ষায় ফেলবো সিওর থাকেন সবাই । নতুন পরিচয় প্রোডিউসার হিসেবে ভালো কিছু করতে চাই । মেকার হিসেবে আরো ভালো কাজ করতে চাই । ২০১৮ এর মত সংখ্যায় অনেক কাজ না হলেও ভালো কাজের সংখ্যা বাড়বে কথা দিচ্ছি, ইন শা আল্লাহ । ফিল্মের চিন্তাও বেশ পেয়ে বসছে আমাকে দিন কে দিন । কি জানি ! ২০১৯ এ কি জানি কি হয় ! কিছু হোক বা না হোক আপনাদের দো’আ থেকে যেনো বঞ্চিত না হই । সেই প্রার্থনাই করি ।
আমি আগেও বলেছি, আমার কাজ, আমার অক্সিজেন । আমার অক্সিজেন আরো পিওর হবে ইন শা আল্লাহ । কাজ করে যেতে চাই, কাজের মাঝেই বেঁচে থাকতে চাই । ধন্যবাদ ২০১৮ । ওভার এন্ড আউট.. 🙂